Skip to toolbar
Categories

এলোমেলো কথামালা

দীর্ঘ বিলম্বের পর অবশেষে ট্রেনের হুইসেল বেজে উঠল। বিরক্তির মাত্রা একটু নামতে শুরু করল। লক্ষ্য করলাম, স্টেশনের পরিবেশটা হঠাৎ একটু গাঢ় হয়ে উঠল। বিদায় বেলায় যেমন হয় আর কি। কিছু ছুটকা কান্নাকাটির দৃশ্যও দেখা যাচ্ছে। ট্রেনটা আস্তে আস্তে চলতে শুরু করল। বিশাল একটা দানবের ছন্দময় চলাচল। ঝিক ঝিক……ঝিক ঝিক……ঝিক ঝিক। একা একা ট্রেন জার্নি করাটা কিছুটা বোরিং। ট্রেন জার্নি মানেই হলো চলন্ত ট্রেনে ছুটোছুটি করা, তুমুল আড্ডাবাজি, এটা সেটা খাওয়া, কিছুক্ষন পর পর চা, একটু জায়গা করে নিয়ে কার্ড খেলা। দল বেঁধে ট্রেনে যাবার মজাই আলাদা।

“আপনি কি বাড়ি যাচ্ছেন? ”

“জ্বীনা। আমার বাড়ি এখানেই। পেটের তাগিদে যাচ্ছি। হিরন্ময় স্টেশনে নামব।”

“পেটের তাগিদে মানে? চাকুরী? ”

“হ্যাঁ। সেরকমই। রুপসাগর চেনেন? ওখান কার চা বাগানে অফিসার হিসেবে জয়েন করব। ”

“তা আগে কোথায় ছিলেন আপনি? ”

“এখানেই একটা মাল্টি ন্যাশনালে ছিলাম। ”

“আশ্চর্যতো। সবাই কেন্দ্রে আসতে চায়, আর কেন্দ্র থেকে বিচ্যুত হচ্ছেন। অনেক ভালো অফার নাকি? ”

“নাহ্‌ খুব বেশি ভালো না। স্বেচ্ছায় যাচ্ছি। একঘেয়েমি কাটানো বলতে পারেন। তাছাড়া একটু কোলাহল মুক্ত পরিবেশে থাকতে চাই কিছুদিন। ”

“আপনার কথার মাঝে একটা সূক্ষ্ম হতাশার ছাপ আছে। পলায়ন মনোবৃত্তির গন্ধ পাওয়া যায়। সেটা কি বুঝতে পারেন? ”

আমি একটু হেসে বললাম, “তাই বুঝি। তা আপনি কোথায় যাচ্ছেন, মিঃ ভৌমিক।”

“আমি? আমি কোথায় যাচ্ছি? আপনার মতই একটা তাগিদে বেরিয়েছি। সামান্য একটু পার্থক্য আছে। পেটের নয় মনের তাগিদে বেরিয়েছি। ”

আমি কিছু বললাম না। চুপ করে রইলাম। মনে হচ্ছে সে এখনো তার কথা শেষ করেনি।

“আমি যাচ্ছি চর দখলের লড়াই দেখতে। সেদিন খবরের কাগজে পড়লাম, শঙ্খ নদীর দক্ষিনে নতুন চর জেগেছে। সেই চর দখল নিয়ে দু পারের মানুষের মধ্যে লড়াই হবে হবে ভাব। টান টান উত্তেজনা চলছে। আর সামলাতে পারলাম না নিজেকে। তাই বাক্সপেটরা নিয়ে রওনা হয়ে গেলাম। ”

“চর দখলের লড়াই দেখতে যাচ্ছেন? ”

“হম্‌ম। লড়াই দেখতে যাচ্ছি। আসলে আমি যাচ্ছি ছবি তুলতে। প্রথমে চর দখলের বিস্তারিত শুনব। দুপক্ষের সাথে কথা বলবো। তারপর মুল লড়াইয়ের ছবি তুলব। ”

“আপনি কি সাংবাদিক? নাকি লেখক? ”

“আমি কোনোটাই না। আমি হলাম একজন আর্টিস্ট। বাংলায় বলে চিত্রকর কিংবা শিল্পী। ”

“এটা কি কোনো অপেশাদার ভ্রমন? ”

“উহু। পুরোপুরি পেশাদার ভ্রমন। ভ্রমনের উদ্দেশ্যই হলো ছবি আকাঁ। মনের খোরাক মেটানো। ”

“বাহ্‌, বেশ মজারতো। একটা ছবি আকাঁর জন্য এত আয়োজন। কিন্ত আমি যতদূর জানি শিল্পীদেরতো এত আয়োজন করতে হয় না। ওদের অসম্ভব কল্পনা শক্তি। ওরা যতটুকু দেখে তার চেয়ে অনেক বেশি আকঁতে পারে। ”

“সবার ক্ষেত্রে এমন হয়না। ”

“কিছু মনে করবেন না। আমি বোধহয় না জেনেই মন্তব্য করে ফেলেছি। ”

“আপনি যা বলেছেন তাতে কোনো ভুল নেই। এটা একটা খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। আসলে সমস্যাটা আমার নিজের। হ্যাঁ এটাকে সমস্যাই বলবো আমি। আমি হলাম একজন অসম্পূর্ণ চিত্রকর। আমার মধ্যে ক্রিয়েটিভিটি বলে কিছু নেই। আমি না দেখে না শুনে কিছু আকঁতে পারি না। আমার কল্পনা শক্তি খুব খারাপ, যেটা একজন আর্টিস্টের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমি ভাবতে পারি আমি কি চাই, কিন্ত তার কোনো ছবি আমি কল্পনায় আনতে পারি না। তাই আমাকে অপেক্ষা করতে হয় দিনের পর দিন। যখন সে রকম কোনো সুযোগ আসে, আমি চেষ্টা করি, অপূর্ণতা ঘোচানোর।”

অপূর্ণতা ঘোচানো, শব্দ দুটো কানে বাজছে। এই লোকটা তার অপূর্ণতার ভালো একটা সংজ্ঞা বের করেছে। তারপর ভালো একটা সমাধানও। সব মানুষ পারে না। এই জন্যই পরিপূর্ণ মানুষ পাওয়াটা অনেক কঠিন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মানুষ জানেইনা কোথায় তাদের অপূর্ণতা।

“আপনি কতদিন ধরে এভাবে ছবি আঁকছেন? ”

“সম্পূর্ণ একক প্রচেষ্টায় সর্ব প্রথম যে ছবিটা একেঁছিলাম, আজ থেকে প্রায় পচিঁশ বছর আগে। একটা ব্যাঙের ছবি। সেই ছবি দেখে আমার ড্রয়িং টীচার বলেছিলেন ব্যাঙটা দেখতে মাটির ব্যাঙের মতন হয়েছে। আমি বোকার মতন চেয়ে ছিলাম। তখনো এই কথা বোঝার মতন বয়স আমার হয়নি। টীচার বললেন, ব্যাঙটা দেখতে এমন হবে যেন মনে হয় এক্ষুনি একটা লাফ দেবে। ওটাকে ধরতে গেলেই ছুটে পালাবে। ব্যাঙটার পেশি গুলো হবে একেবারে তরতাজা। চোখের দৃষ্টিতে একটা ভীতির ছাপ। আলোর খুব কাছাকাছি থাকলে যেমনটা হয়। তখন বুঝতে পারিনি কথা গুলো। তবে গত পচিঁশ বছর এই কথা গুলো আমাকে তাড়িয়ে বেড়িয়েছে। ”

আমি ঠিক বুঝতে পারছিলাম না আমার কি বলা উচিত। তাই চুপ করে রইলাম।

“ওই টীচারটার কথা আমার সারা জীবন মনে থাকবে। আমি প্রতিবার এক একটা ছবি একেঁ নিয়ে যেতাম ওনার কাছে আর উনি প্রচন্ড বিরক্ত হয়ে নানান ধরনের খুতঁ বের করতেন। এটা এমন হবে না, ওটা এমন হওয়া উচিত, এই ছবিতে আবেগ নেই, দেখে মনে হচ্ছে এটা ছবি, বাস্তবতার স্পর্শ নেই এমন আরো কঠিন কঠিন সব কথা। বিশ্বাস করবেন না আমি যে কি কঠিন পরিশ্রম করতাম এক একটা ছবি আকাঁর জন্য। এত পরিশ্রমের পর এমন কথা এই বয়সেও সহ্য করা সম্ভব না। তখনতো নিতান্তই শিশু ছিলাম। প্রচন্ড কান্না পেত। বাসায় ফিরে গিয়ে অঝরে কাদঁতাম। তখন থেকেই শুরু হলো আমার এক কঠিন সময়ের যাত্রা। মানুষের কত অদ্ভুত সমস্যার কথা শুনেছি। আমার তেমন কোনো সমস্যাই ছিল না। কিন্ত একটা বিরাট সমস্যা। প্রায় রাতে ঠিক মতন ঘুমাতে পারতাম না। মনে হতো ব্যাঙটা বোধহয় এখনো ঠিক মতন আকঁতে পারছি না। ব্যাঙের চোখ দুটোতে এখনো ভয়ের চিহ্ন দিতে পারছি না। ব্যাঙটাকে দেখে মনেই হচ্ছেনা এটা লাফ দিতে পারে। তারপর একদিন পাগলের মতন বের হয়ে পড়লাম ব্যাঙের খোজেঁ। তখন আমি চারুকলার প্রথম বর্ষের ছাত্র। অনেক খুজেঁ ধরে নিয়ে এলাম একটা তরতাজা পেশি বহুল ব্যাঙ। ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়েছিল আমার দিকে। কোনো ভাষা নেই। বোধগম্য কোনো ইঙ্গিত নেই। কিন্ত তারপরও আমি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছিলাম। একটা করুন আকুঁতি। চোখে ভয়ংকর ভীতির ছাপ। আমি আবার আকঁতে বসলাম। সারারাত জেগে আকঁলাম। কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি নিজেও জানি না। ঘুম থেকে উঠে চমকে উঠলাম। তাকিয়ে দেখি আমার চোখের সামনে একটা জ্বলজ্যান্ত ব্যাঙ। মনে হচ্ছিল এক্ষুনি একটা লাফ দেবে। আমি শিউরে উঠলাম। কোনো আনন্দ অনুভূতি নয়। একটা ভয়ংকর কষ্ট বোধ হতে লাগলো। বিজয়ের উচ্ছ্বাস নয়, ছুয়েঁ গেল ক্লান্তির স্পর্শ। আমি জেনে গেলাম আমার জীবনের সবচেয়ে বড় সীমাবদ্ধতা। হাউ মাউ করে কাদঁতে লাগলাম। আমার এখনো মনে আছে। একেবারে স্বচ্ছ সেই অনুভুতি। দুদিন ঘর থেকে বের হইনি। আমার আকাঁ সমস্ত ছবি গুলো ঘরময় ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল। আর মাঝ খানে বসে আমি করুন চোখে তাকিয়ে ছিলাম ছবি গুলোর দিকে। কি ভয়ংকর অসহায় যে লাগছিল বলে বোঝাতে পারবো না। সেই দুদিনে আমি বুঝতে পারলাম অপূর্ণতার সংগা। তখন থেকে কোনো কিছু না দেখে, না বুঝে, না শুনে রঙ তুলি হাতে নিই না।”

ঠিক বুঝতে পারছিলাম না কি করবো। মনে হচ্ছিল মানুষটার চোখ ছল ছল করছে। এমন একটা অনুভূতি যা ছোঁয়া যায় না। প্রসঙ্গ পাল্টাতে জিজ্ঞেস করলাম

“আপনার কোনো একক চিত্র প্রর্দশনী হয়েছে? ”

“হ্যাঁ। দুবার হয়েছে। যদি সব কিছু ঠিক থাকে তবে বছর দুয়েকের মধ্যে আরেকটি প্রর্দশনী হয়তো হতে পারে। ”

“আপনি তাহলে বেশ ভালোই জনপ্রিয়। ”

“আপনি যেমন ভাবছেন ততটা নই। উপরন্ত আমি কিছুটা বির্তকিত বলতে পারেন। আমার কাজ নিয়ে আলোচনার চেয়ে সমালোচনা হয় বেশি। আমার বিষয় বস্ত নির্বাচন নিয়ে সব সময় আমাকে কথা শুনতে হয়েছে। এই যেমন ধরেন চর দখল। খুবই সেনসিটিভ একটা বিষয়। আর আমি যাচ্ছি নিজের স্বার্থ উদ্ধার করতে। এসব কেউ ভালো চোখে দেখে না। তবে আমি এসব পাত্তা দিই না। আমার যা ভালো লাগে, যা আমি চিন্তা করি, সেটাই করি। ”

“আপনার সবচেয়ে বির্তকিত ছবির বিষয় কি ছিল? ”

“একজন ভীত সন্ত্রস্থ নারীর মুখ। ”

“এই ছবির মডেল কে ছিল? ”

“আমার মা। মা মারা গেছেন অনেক দিন হলো। অনেক কিছুই আর খুব একটা মনে পড়ে না। মা কিভাবে হাসত, কিভাবে কথা বলতো কিংবা কিভাবে আগলে রাখতো আমাকে। তবে মা’র সেই মুখয়বটা ভুলতে পারবো না কোন দিন। ” এই বলে রনবীর একটু থামলেন।

“সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো ছবিটা দেখে সবাই ভেবেছে এটা নারী নির্যাতনের ছবি। সেই ছবি নিয়ে কত কান্ড। নারীবাদী সব সংগঠনতো একেবারে তোলপাড় করে ফেললো। পত্র পত্রিকা থেকে সাংবাদিকরা এল আমার সাক্ষাৎকার নিতে। ঘুরিয়ে পেচিয়ে সবাই ওই ছবির ইতিহাস জানতে চায়। আমি কিছু বলি না। এড়িয়ে যাই। আর খুব বেশি জাকিয়ে ধরলে বলি নো কমেন্ট। আর মজা দেখি। ”

“আসলে প্রেক্ষাপটটা কি? অবশ্য যদি আপনার বলতে কোনো আপত্তি না থাকে।”

“হা হা হা হা। আপনাকে বলতে কোন সমস্যা নেই। যদি আপনি কোনো ছদ্মবেশি সাংবাদিকও হন তাতেও আমার কিছু আসে যায় না। এটা অনেক অনেক দিন আগের কথা। তখনো আমাদের বাড়িটা পাকাঁ হয়নি। মাটির ঘরের উপর টিন। হঠাৎ একদিন প্রচন্ড ঝড় হলো। ঘরে শুধু আমি আর মা। চার পাশে শুধু বাতাসের তীব্র শব্দ, সাথে বজ্রপাত, আমি প্রচন্ড ভয় পেয়ে মাকে জড়িয়ে ধরে কাদঁছিলাম। মা’রও নিশ্চয়ই অনেক ভয় লাগছিল। তারপরও আমাকে অভয় দিয়ে যাচ্ছিলেন। আমি চোখ বন্ধ করে ছিলাম। মায়ের তীব্র আর্তনাদে একসময় চোখ মেলে তাকাই। মা কাদঁছিলেন। যতটা না ভয়ে তার চেয়ে বেশি বোধ করি দুশ্চিন্তায়। যতটা না নিজের জন্য তার চেয়ে অনেক বেশি আমার জন্য। এটা কাউকে বলে দিতে হয় না। মায়েরা যে এমনি হয়। সেই রাতেই আমার মা মারা যান। এক টুকরো টিন এসে পড়ে তার গায়ে। আমি বেচেঁ যাই কোনো রকমে। মা আগলে রেখেছিলেন বলেই। এসব কথা ঘটাও করে বলতে ভালো লাগে না। তাই সবসময় বলি নো-কমেন্ট। যার যা খুশি ভাবুক। শিল্পীর সৃষ্টিকে নিজের মতন ব্যাখ্যা করার অধিকার সবার আছে তাই না?”

“হম্‌ম। তা অবশ্য ঠিক। আচ্ছা এমন কোনো ছবি আছে যেটা আকঁতে গিয়ে আপনাকে অনেক দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে? ”

“হম্‌ম। ঠিক দশ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে। একটা নিষ্পাপ শিশুর উচ্ছ্বলতার দৃশ্য মনে ধারন করতে। ”

“আপনি কি সংসার ত্যাগী মানুষ নাকি ? শিশুর মুখের হাসির জন্য এতদিন অপেক্ষা করতে হবে? ”

“নাহ্‌। সংসার ত্যাগী নই। আমার স্ত্রী আছেন। বছর দশেক হলো আমাদের বিয়ে হয়েছে। আমাদের কোনো সন্তান নেই। কখনো হবেও না। ”

“আমি অত্যন্ত দুঃখিত। ”

“দুঃখিত হবার কিছু নেই। যা সত্য তাতো আর কেউ ধরে রাখতে পারে না। আপনি ছবিটা দেখবেন? আমার ব্যাগে ওটার একটা স্কেচ আছে। ”

“অবশ্যই দেখবো। ”

ভদ্রলোক ব্যাগ থেকে একটা স্কেচ বুক বের করে দেখালো। অপূর্ব একটা ছবি। ঠোটের কোনে এক চিলতে ঝলসে যাওয়া হাসি। চোখ ভর্তি নিষ্পাপতা। মনে হচ্ছিল একটু ছুঁয়ে দেখি।

“আপনি যে জামাটা পরে আছেন সেটার ডিজাইনও কি আপনার করা? ”

“নাহ্‌। এটা আমার স্ত্রীর করা। সে আমার চেয়ে অনেক ভালো কাজ করতে পারে। কিন্ত কেন জানি ওর এসবে আগ্রহটা একটু কম। ”

“একটা ব্যক্তিগত প্রশ্ন করতে পারি? ”

“হম্‌ম পারেন। ”

“ব্যক্তি জীবনে কি আপনার কখনো এরকম কোনো অপূর্ণতা কাজ করে ? আপনি কি কখনো সেসব অপূর্ণতা পূরন অভিযানে বেরিয়েছেন? ”

“পেশাদার আর ব্যক্তি জীবন দুটো এক সুত্রে গাথাঁ। এই দুটোকে আলাদা করা যায় না। একটু ভেবে দেখেন। আমাদের যে কোনো সন্তান নেই এটাকেও আমার কোনো অপূর্ণতা মনে হয় না। এই ব্যাপারটা আমরা স্বামী-স্ত্রী দুজনই স্বাভাবিক ভাবে নিয়েছি। এটা নিয়ে আমাদের কোনো আক্ষেপ নেই। আর আমি ব্যক্তি জীবনে একটা নীতিতে বিশ্বাস করি। তা হলো যতটুকু পাওয়া যায় ততটুকুতে ভালো থাকার চেষ্টা করা। তবে সেটা হয়তো সব সময় সম্ভব হয় না। অপূর্ণতাতো থাকেই। সব অপূর্ণতা কি আর ঘোচানো যায়? এটাও জীবনের একটা অংশ। এসব নিয়েই বেচেঁ থাকতে হয়। আমি মনে হয় একটু বেশিই বকে যাচ্ছি। দুঃখিত। ”

“মোটেই না। আমারতো ভালোই লাগছে শুনতে। ”

“বেশ ভালোই ঠান্ডা পড়ছে। কি বলেন? ”

“হম্‌ম। চা খাওয়া দরকার। ”

“ক্যান্টিনে গিয়ে খেয়ে আসুন। ”

“আপনিও চলুন। ”

“নাহ্‌। আমার এদের চা টা একেবারে ভালো লাগে না। আমি পরের স্টেশনে লেবু চা খাবো। আপনি খেয়ে আসুন। ”

“ঠিক আছে। আমি উঠছি। ”

“আপনার কাছে লাইটার আছে? একটা সিগারেট খাওয়া দরকার। ”

লাইটারটা এগিয়ে দিলাম।

No Comments

Post A Comment